যেই ক্ষমতায় আসুক ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের হেরফের হবে না

ভারতের সাধারণ নির্বাচনের তারিখ (লোকসভা) ঘোষণা করেছে দেশটির নির্বাচন কমিশন। এবার সাত ধাপে নির্বাচন হবে। এবার ভোট হবে ১১,১৮,২৩ ও ২৯ এপ্রিল এবং ৬,১২ ও ১৯ মে। ফলাফল ঘোষণা হবে ২৩ মে। প্রায় দেড় মাসব্যাপী এ নির্বাচন নিয়ে বাংলদেশেও রয়েছে ব্যাপক আগ্রহ।

ভারতের লোকসভা নির্বাচন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কূটনীতিকরা জানান, ভারতের নির্বাচনে যেই ক্ষমতায় আসুক বাংলাদেশের সঙ্গে গত এক দশকে যে সম্পর্ক গড়ে ওঠেছে তার পরিবর্তন হবে না।

সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শমশের মবিন চৌধুরী (বীর বিক্রম) কে বলেন, অতীত ইতিহাস দেখলে বোঝা যায় নতুন যে সরকারই  আসুক বাংলাদেশ- ভারত সম্পর্ক একই থেকেছে।  অন্যদিকে বিগত এক দশকে যে সম্পর্ক তৈরি হয়েছে তা এগিয়ে নিয়ে যাবে ভারতের নতুন সরকার এটা আমি বিশ্বাস করি। দুই দেশের মধ্যে অমীমাংসিত অনেক বিষয় সমাধান হয়েছে। তবে অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন নিয়ে ভারতের আরো কিছু করার আছে।

শমশের মবিন চৌধুরী বলেন, আমি কিছুদিন আগে ভারতে গিয়েছিলাম।  সেখানকার কেন্দ্রীয় সরকারের এ বিষয়ে সদিচ্ছার কমতি নেই।  বিশ্বের বিভিন্ন মহাদেশে নদীর পানি বণ্টন খুব সুন্দরভাবে সমাধা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মেক্সিকো ও কানাডার অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা ভাগাভাগি হয়েছে। জার্মানির সঙ্গে নেদারল্যান্ড ও অস্ট্রিয়ার পানি সুন্দরভাবে বণ্টন হচ্ছে।  আমি আশা করি, ভারতের নতুন সরকার এসেও এটির সমাধা করবে। কারণ এতো ভাল সম্পর্কের পরও জনমনে এ নিয়ে প্রশ্ন আছে।        

সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, ভারত তার কূটনীতি ঠিক করে তার নিজের দেশের স্বার্থে। গত এক দশক ধরে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের যে সম্পর্ক গড়ে ওঠেছে তার ভিত্তি বিগত কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকারই করে গেছে। কংগ্রেস যে পথে গেছে মোদি সরকার সেই পথ থেকে একটুকুও সরে যায়নি। বরং এগিয়ে নিয়ে গেছে।

তিনি বলেন, সামনের লোকসভা নির্বাচনে যদি মোদিই ক্ষমতায় আসেন তাহলে একই ধারাবাহিকতা চলবে। অন্যদিকে বর্তমান পরিস্থিতি কংগ্রেসের একক প্রচেষ্টায় নির্বাচন জেতা কঠিন বলে আমি মনে করি। কংগ্রেস জোটবদ্ধভাবে ক্ষমতায় আসলেও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের হেরফের হবে না। কারণ তাদের দেওয়া পথেই মোদি সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে গেছে। অন্যতিকে তৃতীয় কোনো জোট ক্ষমতায় এলেও এ সম্পর্ক নড়চড় হবে না বলে আমি মনে করি।      

ঝানু এ কূটনীতিক বলেন,  নির্বাচনের ভোট গণনা হবে আগামী ২৩ মে অর্থাৎ সেদিনই জানা যাবে বিজেপি বা নরেন্দ্র মোদী আবারও ক্ষমতায় আসবেন কি-না।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ৫৪৩ আসনের লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন হবে ২৭২ আসন। প্রায় ৯০ কোটি ভোটার এবারের নির্বাচনে ভোট দেয়ার সুযোগ পাবেন এবং এজন্য ভোট কেন্দ্র থাকবে দশ লাখেরও বেশি। ২০১৪ সালের নির্বাচনে ৬৬% ভোটার ভোট দিয়েছিল। ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বেই বিজেপি ২৮২টি আসনে জিতে নির্বাচনে বিশাল জয় পায়। সেটিই ছিলো প্রথমবারের মতো বিজেপির নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া।

২০১৪ সালের নির্বাচনে শোচনীয় হার মানতে হয়েছিল কংগ্রেসকে। মাত্র ৪৪টি আসন পেয়েছিলো তারা।পরের চার বছরে অনেক রাজ্য নির্বাচনেও হেরেছে তারা।

তবে গত ডিসেম্বর থেকে দলটি শক্তি পুনরুদ্ধারের দিকে যেতে পারছে বলে মনে হচ্ছে। রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেস তিনটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যে জয় পেয়েছে। তার বোন প্রিয়াঙ্কা গান্ধীও রাজনীতিতে যাত্রা শুরু করেছে।

/বার্তা২৪.কম-